প্রকাশিত: Sat, Jun 22, 2024 9:56 AM
আপডেট: Sat, Dec 6, 2025 5:22 PM

[১]সুনামগঞ্জে বন্যার পানি কিছুটা কমলেও বেড়েছে দুর্ভোগ

তাছাদ্দুক রাজা চৌধুরী, সুনামগঞ্জ: [২] ভারতের চেরাপুঞ্জি ও সুনামগঞ্জে বৃষ্টিপাত না হওয়ায় জেলায় পানি কিছুটা কমেছে। তবে এই পানি গিয়ে হাওর এলাকার বাড়িঘরে চাপ দিচ্ছে। সুনামগঞ্জ শহরের অনেক এলাকার এবং জেলার বিভিন্ন উপজেলার নিম্নাঞ্চল ও ঘরবাড়ির অন্তত ৮০ ভাগ এখনও প্লাবিত। যদিও শুক্রবার দুপুর থেকেই হালকা রোদের ঝিলিক দেখা দেয়ায় মানুষ কিছুটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছে।

[৩] পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার জানিয়েছেন সুরমা নদীর পানি বিপদসীমার ২৪ সেন্টিমিটার উপর প্রবাহিত হচ্ছে। গত ২৪ ঘন্টায় বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ৫৫ মিলিমিটার।

[৪] তিনি আরও জানান, ভারতের মেঘালয়ের চেরাপুঞ্জির অবস্থা ভাল যদি সেখানে ভারী বর্ষণ না হয় তাহলে আশংকা নেই। এখনও অনেক জায়গাতেই রাস্তাঘাট তলিয়ে আছে, কারো ঘরে কোমর পানি থেকে গলা পানি,ডুবেছে ফসলের খেত,ভেসে গেছে পুকুরের চাষকৃত মাছ। প্লাবিত হয়েছে স্কুল কলেজ, মাদ্রাসা ,হাসপাতাল ও সরকারী বেসরকারী অফিস। দোকান পাট অধিকাংশই বন্ধ থাকায় নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম অতিরিক্ত মূল্যে কিনতে বাধ্য হচ্ছেন। নিম্ন আয়ের মানুষ খুব সমস্যার মধ্যে আছেন।

[৫] সরকারের তরফ থেকে আশ্রয় শিবিরের বন্যার্ত মানুষের মাঝে শুকনো খাবার ও রান্না করা খাবার দিলেও তা খুবই অপ্রতুল। অনেক নলকূপ পানির নীচে থাকায় খাবার পানির সংকট রয়েছে। 

[৬] জেলা জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী সৈয়দ খালেদুল ইসলাম জানান, জেলার ১২ হাজার নলকূপ আংশিক ও তিন হাজার সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তিনি ইউএনও, পি আই ও দের মাধ্যমে ইতিমধ্যেই তিন লাখ পানি বিশুদ্ধ করন বড়ি বিতরণ করেছেন। ১৫ লাখ বড়ি মজুদ আছে।

[৭] সুনামগঞ্জ জেলা মৎস্য অফিসার সামছুল করিম জানিয়েছেন, জেলার ২১শ চাষকৃত পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। হাঁস, মোরগ, গরু, ছাগলসহ গবাদিপশুর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশংকা করছেন তবে এখনও তা নিরুপণ হয়নি জানিয়েছেন জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মো রফিকুল ইসলাম। গো খাদ্যের সংকট ও রয়েছে। বানভাসী মানুষ নিজেদের নিরাপদ রাখার পাশাপাশি তাদের গবাদিপশুর নিরাপদ রাখার প্রাণপণ চেষ্টা করছেন। সুনামগঞ্জ জেলার সাথে বিশ্বম্ভরপুর, তাহিরপুর জামালগঞ্জ,দোয়ারাবাজার ছাতক ও জগন্নাথপুর উপজেলার সড়ক যোগাযোগ এখনও বিচ্ছিন্ন আছে। ছাতক সিলেট সড়ক যোগাযোগ ও বন্ধ আছে।

[৮] জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিমল চন্দ্র সোম জানান, ১৭শ হেক্টর আউশ ধান ও ৫০০ হেক্টর সবজী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে যার বাজার মূল্য দেড় কোটি টাকার উপর। সুনামগঞ্জ শহরের বিভিন্ন আশ্রয় শিবিরের বন্যার্তদের মাঝে শুকনো খাবার ও রান্না করা খাবার দিলেও বাড়ি ঘরের পানি বন্দিরা কিছুই পাননি। ফলে চাল চুলা হারিয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছন।

[৯] জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাশেদ ইকবাল চৌধুরী জানিয়েছেন, সুনামগঞ্জ জেলার জন্য ৫শ টন জি আর চাল ও নগদ ৩৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছেন। ইউএনও গণ চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের মাধ্যমে বিতরণ করেছেন। পর্যাপ্ত ত্রান মজুদ আছে। সম্পাদনা: ইকবাল খান